বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এবং বিশ্বমঞ্চে বাঙালির শ্রেষ্ঠত্বের স্মারক হলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'গীতাঞ্জলি'। ১৯১৩ সালে এই কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্যই প্রথম এশীয় হিসেবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তবে গীতাঞ্জলি কেবল একটি পুরস্কার বিজয়ী বই নয়, এটি মানুষের আত্মার সাথে পরমাত্মার মিলনের এক অনন্য দলিল।
কাব্যের মূল সুর:
'গীতাঞ্জলি' শব্দের অর্থ হলো গানের অঞ্জলি। এই কাব্যগ্রন্থের প্রতিটি কবিতা বা গান মূলত স্রষ্টার প্রতি নিবেদিত এক একটি প্রার্থনা。 এখানে কবি তাঁর অহংকার বিসর্জন দিয়ে নিজেকে পরমেশ্বরের চরণে সমর্পণ করেছেন। তাঁর ভাষায়— "আমার মাথা নত করে দাও হে তোমার চরণধুলার তলে।" এই আত্মসমর্পণের সুরই গীতাঞ্জলিকে বিশ্বজনীন করে তুলেছে।
আধ্যাত্মিকতা ও জীবনবোধ:
গীতাঞ্জলিতে স্রষ্টাকে কবি কখনো বন্ধু, কখনো প্রিয়তম আবার কখনো রাজা হিসেবে সম্বোধন করেছেন। এখানে মৃত্যু কোনো ভীতিকর বিষয় নয়, বরং তা জীবনের পূর্ণতা এবং অসীমের সাথে মিলনের একটি সেতু。 সাধারণ দুঃখ-কষ্টের ঊর্ধ্বে উঠে জীবনের প্রকৃত আনন্দ খুঁজে পাওয়ার যে দর্শন রবীন্দ্রনাথ এখানে তুলে ধরেছেন, তা পাঠ করলে মনে এক অদ্ভুত প্রশান্তি জন্ম নেয়।
কেন গীতাঞ্জলি পড়বেন?
১. আত্মিক শান্তি: আধুনিক জীবনের অস্থিরতার মাঝে মনের শান্তি খুঁজতে গীতাঞ্জলির কবিতাগুলো অত্যন্ত কার্যকর। ২. সহজ ও গভীর ভাষা: রবীন্দ্রনাথের শব্দচয়ন এবং উপমা এতই চমৎকার যে, খুব গভীর জীবনদর্শনও এখানে অত্যন্ত সহজ ও প্রাঞ্জলভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। ৩. বিশ্বমানের সাহিত্য: বিশ্বসাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্পদ হিসেবে এর গুরুত্ব অপরিসীম। নোবেল কমিটি কেন এই কাব্যকে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি দিয়েছিল, তা বুঝতে হলে এটি পাঠ করা জরুরি।
bnebooks-এর পাঠকদের জন্য শেষ কথা:
গীতাঞ্জলি কেবল পড়ার জন্য নয়, এটি অনুভব করার মতো একটি বই। আপনি যদি সাহিত্যের গাম্ভীর্য এবং আধ্যাত্মিক চেতনার মিশেল পছন্দ করেন, তবে এই বইটি আপনার সংগ্রহে থাকা বাধ্যতামূলক। BNEBOOKS সব সময় পাঠকদের এমন মানসম্পন্ন এবং কালজয়ী সাহিত্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

