লিখেছেন: মাসুম আহমেদ আদী
বইঃ কালো টাকা
সিরিজঃ মাসুদ রানা
লেখকঃ কাজী আনোয়ার হোসেন।
প্রকাশকালঃ ২০০৬
মূল্যঃ৪৩ টাকা মাত্র।
রিভিউঃ
যা কখনও কেউ কল্পনাও করতে পারেনি জীবনে, তাই ঘটতে চলেছে।ফাঁস হয়ে যাচ্ছে সুইস ব্যাঙ্কের সিকিউরড নাম্বারড একাউন্ট।আর ফাঁস করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে একদল ব্ল্যাকমেইলার।
হঠাৎ করে একদিন ব্যাঙ্কের সদর দরজার সামনে একটা চিঠি কুড়িয়ে পায় ব্যাঙ্কের সিকিউরিটি গার্ড হ্যান্স মুলার।আঠা দিয়ে বন্ধ করা মুখ।ঠিকানার জায়গায় ফেল্ট পেন দিয়ে টকটকে লাল কালিতে
লেখা রয়েছে-
হের গুন্থার অটোম্যান
প্রেসিডেন্ট
জরুরী।
চিঠিটি গুরুত্বপূর্ণ মনে করে মুলার সেটা পাঠিয়ে দেয় অটোব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্ট গুন্থার অটোম্যানের কাছে।ব্যাঙ্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট রোজেনবার্গের সামনে চিঠিটা খুললেন অটোম্যান।একই কলম দিয়ে লেখা একটা মেসেজে বলা হয়েছে-
মুখ বন্ধ রাখার জন্যে
পাঁচ মিলিয়ন ফ্র্যাঙ্ক
দিতে হবে আমাদের কে
নির্দেশের অপেক্ষায় থাকুন।
এই চিঠি পেয়ে চিন্তিত হয়ে পরলেন প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট দুজনেই।এইটা একটা হুমকি। ওরা র্যানসাম চায়।কিন্তু এটাকে কি র্যানসাম বলা যায়? কেউ আপনার একটা জিনিষ চুরি করেছে, সেটা ফিরে পাওয়ার জন্য আপনি টাকা দিলেন সেটা হয় র্যানসাম।কিন্তু ওদের কাছে অটোব্যাঙ্কের কি এমন আছে যার কারনে পাঁচ মিলিয়ন ফ্র্যাঙ্ক দিতে হবে?
এর কিছুদিনের মধ্যেই অটোব্যাঙ্কের বেশকিছু গোপন একাউন্ট হোল্ডারের ঠিকানায় পৌছে যায় একটা করে চিঠি।সেসব একাউন্ট হোল্ডারদের পরিচয় অটোব্যাঙ্ক ছাড়া আর কারো জানার কথা নয়। একটা চিঠি এইরকম-
মি. গুইডো ফেলসিয়া
মুখ বন্ধ রাখার জন্যে
আপনি যদি আমাদেরকে
এক মিলিয়ন সুইস ফ্র্যাঙ্ক দেন
তাহলে আপনার মনিবরা
আপনার গোপন একাউন্ট
সম্পর্কে কিছুই জানবেনা।
এইভাবে একে একে চিঠি যায় মডেল মোনা জেনেটির কাছে, টড কোরিসের কাছে,মার্কাস বার্গলার এবং পেড্রো ফেডানো এর কাছে।
এরা সবাই ব্যক্তিগত জীবনে গুরুত্বপূর্ণ মানুষ।এদের গোপন একাউন্ট ফাঁস হয়ে গেলে অনেকের হয়তো বেচে থাকাটাও সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে।আর গোপনীয়তাই হচ্ছে সুইস ব্যাঙ্কের বিজনেস পলিসি।যদি গ্রাহকের গোপন একাউন্ট ফাঁস হয়ে যায় তাহলে তাদের ব্যাঙ্ক লাটে উঠবে।টাকা পেয়েও যে ব্ল্যাকমেইলার রা তথ্য ফাঁস করবে না সেটার নিশ্চয়তা কি?
পুলিশ কে জানালেও কোনও না কোনও ভাবে মিডিয়া জেনে ফেলবে। আর মিডিয়া জানলে সেটা প্রচার করবে চারিদিকে।ওদের ব্যাঙ্ক এ আর কেউ টাকা রাখবেনা, যাদের টাকা আছে তারাও টাকা তুলে নিবে।তাই ভাইস প্রেসিডেন্ট রোজেনবার্গের পরামর্শে রানা কে অনুরোধ করে তাদের কেস টা তদন্ত করে দেখতে।ডাক পেয়েই জুরিখে চলে আসল রানা।তদন্তের ভার গ্রহন করল এবং নিশ্চয়তা দিল পুলিশ কিছু জানতে পারবেনা।
এইদিকে জুরিখ পুলিশের ক্যাপ্টেন হ্যান্স শ্লাচোরের সঙ্গে রানার সম্পর্ক সাপে-নেউলে।রানার জুরিখে আসার খবর পেয়েই পিছনে লাগল রানার।তদন্তে নামল রানা।এর মধ্যে একে একে খুন হতে থাকল কালো টাকার মালিকরা।রানাকে খুন করার জন্য রানার হোটেল কামরায় এসে নিজেই খুন হয়ে গেল রানার আততায়ী।
কে এই ব্ল্যাকমেইলার? রানার সন্দেহের তালিকায় আছে অটোব্যাঙ্ক এর প্রেসিডেন্ট হের অটোম্যান নিজেই, ভাইস প্রেসিডেন্ট রোজেনবার্গ, চীফ একাউন্টেন্ট মাদাম ভ্যানেসা এমনকি পুলিশের ক্যাপ্টেন হ্যান্স শ্লাচোর।
ধৈর্য ধরুন প্লিজ।আস্তে আস্তে সবই খোলাসা করতে পারবে রানা।একের পর এক চমক অপেক্ষা করছে ওর জন্যে।
0 Comments