লিখেছেন: মাসুম আহমেদ আদি
বইঃ সাইকো
লেখকঃ রবার্ট ব্লচ
অনুবাদঃ অনীশ দাস অপু
প্রকাশকালঃ ২০১১
প্রকাশকঃ বৈশাখী প্রকাশ
প্রচ্ছদঃ রকিবুল হক রকি
ঘরানাঃ সাইকো থ্রিলার
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ১২৪
মূল্যঃ ১৫০ টাকা
রিভিউঃ
নরমান বেটস বাড়ি থেকে একদমই বের হন না। অনেকটা নন্দ দুলালের মত। কি দরকার বাইরে যাওয়ার? বাইরে অনেক কোলাহল, অনেক ঝামেলা। নিজের মায়ের সাথে সারাদিন
বাড়িতেই থাকেন, প্রচুর বই পড়েন, বেশিরভাগই মনস্তাত্ত্বিক বই।৪০ বছর বয়সেও এখনও মায়ের খোকা ভাবেন নিজেকে। তার মা ও তাকে আগলে রাখে একদম একটা বাচ্চা ছেলের মত। আসলে নরমান যে কখনও বাইরে যেতে চায়না, কারও সাথে মিশতে চায়না সেটা তার মায়ের জন্যেই। মা ছাড়া একদম অচল নরমান বেটস। মা-বেটা দুজন মিলে একটা মোটেল চালান, যেটা বাড়ির সিমানাতেই।
বাবা মারা যাওয়ার পর মেরি ক্রেন অকুল পাথারে পরে। মা এবং একমাত্র ছোটবোন লিলির দায়িত্ব এসে পড়ে তার ঘারে। একটা অফিসে চাকরি করে কোনও রকমে সংসার চালায়। কিছুদিন পর মা ও মারা গেলে একদমই ভেঙ্গে পড়ে মেরি। তখন লিলি পরামর্শ দেয় কিছুদিনের জন্য কোথাও বেড়িয়ে আসতে। লিলি তখন একটা চাকরি তে ঢুকে। লিলির কথামত জাহাজে করে বের হয়ে পড়ে মেরি বেড়ানোর জন্য, নিজেকে চাঙ্গা করার জন্য। জাহাজেই স্যাম নামে এক লোকের সাথে ওর সখ্যতা গড়ে উঠে। জাহাজে থাকতে থাকতেই ওদের মধ্যে প্রেম হয়। মেরি স্যামকে বিয়ের কথা বললে স্যাম জানায়, ওর ঘাড়ে বাবার রেখে যাওয়া ঋনের বোঝা আছে, সেগুলা শোধ করতে আরও বছর দুয়েক লাগবে। স্যাম অনুরোধ করে মেরিকে বছর দুয়েক অপেক্ষা করতে।
মেরি আবার চাকরিতে জয়েন করে চাকরি করতে থাকে। কিন্তু ও আসলে মনে মনে আর অপেক্ষা করতে পারছিল না স্যাম এর জন্যে। তাই একদিন অফিসের ৪০ হাজার ডলার চুরি করে গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে স্যাম এর উদ্দেশ্যে। মেরির বাড়ি থেকে স্যাম এর ওখানে যেতে প্রায় ১৮ ঘন্টা লাগে গাড়ি চালিয়ে যেতে। যখন স্যাম এর বাড়ি আর ২০ কি.মি. দূর, তখন ভাবে এরকম ক্লান্ত শরীর নিয়ে স্যামের সাথে দেখা করা ঠিক হবেনা। ওকে এই অবস্থায় দেখলে স্যাম হয়তো টের পেয়ে যাবে টাকা চুরির বেপারটা। সিদ্ধান্ত নেয় একটা মোটেলে রাত কাটিয়ে, সকালে ফ্রেশভাবে দেখা করবে স্যাম এর সাথে।
মেরি তখন নরমান বেটস এর মোটেলে উঠে। রাতে খাওয়ার ব্যবস্থা না থাকাতে সে রাতে নরমানের সাথেই ডিনার করে। নরমানের মা অবশ্য বেপারটা পছন্দ করেনা। সপ্তাহখানেক পর মেরির অফিস থেকে ভাড়া করা এক গোয়েন্দা মেরির খোজ করতে করতে স্যাম এর এখানে আসে, এদিকে সেদিনই মেরির ছোট বোন লিলিও স্যাম এর ওখানে আসে মেরির খোঁজ করতে।পরদিন ঐ গোয়েন্দা নরমান এর মোটেলে যায়। মোটেল থেকে একবার ফোন করে স্যাম কে জানায় যে মেরি এই মোটেলেই উঠেছিল।এই মোটেলের পর থেকে মেরির আর কোনও ট্রেস পাওয়া যায়নি। পরদিন থেকে ঐ গোয়েন্দারও আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়না।
পুলিশ কোনও কেস না নেয়াতে স্যাম আর লিলি স্বামী-স্ত্রী সেজে ঐ মোটেলে যায়। তারপর ওরা যেটা আবিষ্কার করে সেটা শ্বাসরুদ্ধকর।
ব্যক্তিগত মতামতঃ
বইয়ের প্রথমেই বলা আছে, এটা সর্বকালের সেরা সাইকো থ্রিলার। আমি সম্পূর্ণভাবে কথাটার সাথে একমত। পড়ার পর শুধু ভাবছি, এ আমি কি পড়লাম? তবে অনুবাদ তেমন একটা ভালো হয়নি, অনুবাদকের ভুলের জন্য মেইন টুইস্টটা পাঠক হয়তো আগেভাগেই ধরে ফেলতে পারবেন যেটা মোটেই কাম্য নয়। তাছাড়া প্রচুর বানান ভুল। পড়ার সময় মনে হয়েছে, ওরা হয়তো প্রুফ না দেখেই ছাপায়। স্যাম এর নাম অনেক জায়গায় গ্যাম লেখা, নরমানের নাম ইরমান লেখা। একবার দুবার হলে সমস্যা ছিলনা, কিন্তু অসংখ্যবার একই ভুল পেয়ে যথেষ্ট বিরক্ত লেগেছে।
0 Comments