বইঃ রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেন নি
লেখকঃ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন
প্রকাশকালঃ বইমেলা ২০১৫
প্রকাশকঃ বাতিঘর প্রকাশনী
প্রচ্ছদঃ সিরাজুল ইসলাম নিউটন
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ২৭১
মূল্যঃ ২৪০ টাকা মাত্র
রিভিউঃ
হাইওয়ের পাশে ছোট্ট একটি মফস্বল শহর সুন্দরপুর। নামের মতই সুন্দর এই শহর। আসলে শহর বলা হলেও একটা গ্রাম ছাড়া কিছুই নয়। এই শহরেই হাইওয়ের পাশে সুন্দর ছোট্ট একটি রেষ্টুরেন্ট "রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেনি"। যদিও এই রেষ্টুরেন্টের মালিক মুশকান জুবেরি এটাকে রেষ্টুরেন্ট বলতে নারাজ। এই রেষ্টুরেন্টের বৈশিষ্ট্য হলো এর খাবার এত সুস্বাদু যে একবার কেউ এখানে খেলে সে বার বার ফিরে আসে খেতে। কেমন যেন একটা নেশার মত কাজ করে এখানকার খাবার। রেষ্টুরেন্টের মালিক মুশকান জুবেরি সম্পর্কে কেউ তেমন কিছু জানেনা। শুধু এটুকু তারা জানে যে মুশকান জুবেরি এখানকার জমিদারের নাতবউ। এখানে জোড়পুকুর জমিদার বাডিতেই সে থাকে। লোকাল থানার ওসি, এসপি ও এমপির সাথে মুশকানের খুব ভাব বলে কেউ আর তাকে ঘাটাতে যায়না। কেমন যেন রহস্যময় এক চরিত্র এই মুশকান জুবেরি।
ডিবি পুলিশের নামকরা অফিসার নুরে ছফা সাংবাদিক পরিচয়ে সুন্দরপুর আসেন তদন্ত করতে। ঢাকা থেকে কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার ভাগ্নে নিখোজ হয়ে যায়। যে ট্যাক্সি করে সে যায় তার কাছে খোজ নিয়ে জানা যায় সে রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেনি রেস্টুরেন্ট এ গিয়েছিল। তদন্তে নেমে সে আরও কিছু নিখোজ যুবকের কথা জানতে পারে যাদের শেষ গন্তব্য ছিল সুন্দরপুরের এই রেষ্টুরেন্ট। তাই লোকাল থানার ইনফর্মার আতর কে নিয়ে কাজে নেমে পরে নুরে ছফা। আতর এমন একজন মানুষ যার কাছে সুন্দরপুরের সব খবর থাকে, যেকারনে লোকেরা ওকে বিবিসি বলে ডাকে।
নিখোঁজ হয়ে যাওয়া যুবকদের সাথে কি মুশকান জুবেরির কোনও সংযোগ আছে? তাছাড়া কি এমন সিক্রেট রেসিপি আছে মুশকান জুবেরির যে তার বানানো খাবার খেলে সবাই আবার খাওয়ার জন্য পাগল হয়ে যায়? তদন্ত নেমে এমন সব চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় নুরে ছফা যে আপনারও গা শিউরে উঠবে।
ডিবির প্রাক্তন এক অফিসার কে.এস খান। তার রেকর্ডে কোনও অমিমাংশিত কেস নেই। শেষ পর্যন্ত তার সাহায্য নিয়ে কেসটা সুরাহা করে নুরে ছফা। এবং শেষে এমনকিছু সত্য বেরিয়ে আসে যে পাঠক পড়তে গেলে নির্ঘাত ভয় পাবেন।
ব্যক্তিগত মতামতঃ
অসম্ভব সুন্দর একটা প্লট নিয়ে লেখা অসম্ভব সুন্দর একটা থ্রিলার। কিন্তু লেখকের বাহুল্য দোষে মাঝে মাঝেই বিরক্ত হয়েছি। যে কথাটা এক লাইনে বোঝানো যায় সেটা বই বড় করার জন্য পাঁচ লাইনে বুঝিয়েছেন। এমন কিছু গালাগালি ব্যবহার করেছেন তিনি যেটা আমার কাছে বাহুল্য মনে হয়েছে। তাছাড়া প্রচুর ভুল রয়েছে বইয়ে। আমার কাছে মনে হয়েছে বইমেলা চলে আসায় খুব তাড়াহুড়া করে বইটি লিখেছেন তিনি। একটু যত্ন নিয়ে লিখলে হয়তো একটি মাষ্টারপিস হতে পারতো তার।
0 Comments