Ad Code

Responsive Advertisement

মাও সে তুং এর নির্বাচিত রচনাবলী PDF

Mao Zedong jpg
মাও সে তুং (ছবিঃ উইকিপিডিয়া)

মাও ৎসে-তুং বা মাও সেতুং বা মাও জেদং  (জন্ম- ডিসেম্বর ২৬১৮৯৩; মৃত্যু- সেপ্টেম্বর ৯১৯৭৬চীনা বিপ্লবী মার্কসবাদী তাত্ত্বিক ও রাজনৈতিক নেতা। ১৯৪৯ সালে সমাজতন্ত্রী চীনের প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১৯৭৬ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি চীন শাসন করেন। নেতা ছিলেন। 

তিনি চীনের কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। মার্কসবাদ-লেনিনবাদে তার তাত্ত্বিক অবদান, সমর কৌশল এবং তার কমিউনিজমের নীতি এখন একত্রে মাওবাদ নামে পরিচিত। তিনি চীনের হুনান প্রদেশের শাং তান জেলার শাউ শাং চুং গ্রামের কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মাও ৎসে-তুঙের বাবার নাম ছিল মাও জেন শেং (শুন সেন)। শুন শেং দরিদ্র কৃষক হলেও কয়েক বছর সেনাবাহিনীতে চাকরি করে জমিজমা ক্রয় করে অবস্থার উন্নতি করেন এবং কাঁচামালের ব্যবসা করে রীতিমত মধ্যবিত্ত গৃহস্থ হয়ে ওঠেন। মাওয়ের অন্য দুই ভাইয়ের নাম ছিল সে সেন ও সে তান। মাওয়ের মা ছিলেন শিয়াং শিয়াং জেলার তং শিয়াতো গ্রামের বেন পরিবারের মেয়ে। তিনি ছিলেন দয়ালু। বৌদ্ধ ধর্মে তার খুব ভক্তি ছিল। মাওয়ের বয়স যখন মাত্র সাত তখন থেকে খেতখামারের কাজে লেগে যান। ১৯০১ সালে আট বছর বয়সে মাও গ্রামের পাঠশালায় ভর্তি হন। এবং তেরো বছর বয়স পর্যন্ত ঐ পাঠশালাতে লেখাপড়া করেন। ১৯০৬ সালে মাওয়ের গ্রামের পড়াশোনা শেষ হয়। এরপর তার বাবা তাকে সৈন্যদলে ভর্তি করানোটাকে লাভজনক মনে করেন। তার আগে মাওয়ের সঙ্গে এগারো-বারো বছরের একটা মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে মাও ৎসে-তুং এবিষয়ে লিখেছিলেন-
 'এটা ছিল একেবারে নামমাত্র বিয়ে। আমি কখনোই তার সঙ্গে বসবাস করিনি এবং তাকে আমার স্ত্রী বলেও মনে করিনি।'
মাও সে ৎসে-তুঙের চার স্ত্রী আর তাদের মোট সন্তানের সংখ্যা ছিল ১০ জন।

মাওবাদ কী?
মার্কসবাদ-লেনিনবাদের বিশ্ব-ভাণ্ডারে মাও-সেতুং-এর নতুন অবদানসমূহকে মাওবাদ বলা হয়েছে। মাওবাদের নতুন সংযোজিত অবদানসমূহের মধ্যে প্রথম হচ্ছে মার্কসীয় দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদী দর্শনশাস্ত্রে দ্বন্দ্বতত্ত্বের মহান সংযোজন দ্বারা শ্রেণিসংগ্রাম, পার্টি-গঠন প্রলেতারিয় একনায়কত্ব ও সমাজতান্ত্রিক সমাজের গুণগত বিকাশ সাধন। দ্বিতীয়ত, মাওবাদ নয়াগণতান্ত্রিক বিপ্লবকে শ্রমিক শ্রেণির একনায়কত্বে বিপ্লবী জনগণের গণতান্ত্রিক একনায়কত্ব দ্বারা সমাজতান্ত্রিক সমাজের উৎক্রমণ ঘটাতে কাজ করে। তৃতীয়ত, মাওবাদ প্রলেতারিয়েত শ্রেণির রাষ্ট্র দখলে বলপ্রয়োগের রাজনীতিকে বিশ্বজনীন গণযুদ্ধে পরিণত করে। চতুর্থত, প্রলেতারিয়েত শ্রেণির একনায়কত্বকে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের রাজনৈতিক সংগ্রামের দ্বারা সাম্যবাদী লক্ষ্যের দিকে নিয়ে যায়। শেষৎ, মাওবাদ নয়াগণতন্ত্রের অর্থনীতি ও সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির উচ্চতর বিকাশ ও তার সংগ্রামের রূপ নির্দিষ্ট করে।
 নয়া গণতন্ত্র 
মাও সেতুং ১৯১৭ সালের রাশিয়ায় বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক বিপ্লব, ফেব্রুয়ারি বিপ্লব ও অক্টোবর বিপ্লবের অভিজ্ঞতাকে অনুশীলনের প্রক্রিয়ায় সংশ্লেষিত করে সাম্রাজ্যবাদ ও সামন্তবাদ দ্বারা নিপীড়িত দেশে বিশেষত উপনিবেশিক বা নয়া-উপনিবেশিক এবং আমলা মুৎসুদ্দি পুঁজিবাদী দেশে নয়া গণতান্ত্রিক বিপ্লবের নতুন তত্ত্ব নির্মাণ করেন। এই নির্মাণ হচ্ছে শ্রমিক শ্রেণির নেতৃত্বে কয়েকটি বিপ্লবী শ্রেণির যৌথ একনায়কত্বাধীন প্রজাতন্ত্র যা বিশ্ব সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের অংশ।

গণযুদ্ধ 
গণযুদ্ধ সম্পর্কে মাও সেতুংয়ের নীতি হলও গণযুদ্ধের একমাত্র উদ্দেশ্য জনগণের সেবা করা। গণফৌজ বিষয়ে তার নীতি হচ্ছে পার্টির আজ্ঞাধীন বন্দুক, বন্দুকের আজ্ঞাধীন পার্টি নয়। মাও সেতুংয়ের সামরিক শৃঙ্খলা হলও: রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ও সামরিক গণতন্ত্র পালন; সামরিক অফিসার ও সৈন্যদের ঐক্য; সেনাবাহিনী ও জনগণের ঐক্য। চীনের বিপ্লবী যুদ্ধের রণনীতির সমস্যা রচনায় মাও সেতুং কতকগুলো গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। তার মতে 'যুদ্ধের উদ্দেশ্য হলও যুদ্ধের বিলোপসাধন'। এছাড়াও তাঁর মত হচ্ছে রণনীতির সমস্যা হচ্ছে যুদ্ধের সামগ্রিক পরিস্থিতির নিয়মের পর্যালোচনা। যুদ্ধের নিয়মগুলো শেখা সহজ ব্যাপার নয়, প্রয়োগ করা আরো কঠিন। এমন সেনাপতি চাই যার সাহস আছে, বিচক্ষণতা আছে আর আছে শত্রু এবং নিজেদের বিভিন্ন ক্ষেত্রের অবস্থার সংগে পরিচিত হবার সামর্থ্য। নির্ভুল বিচার, নির্ভুল সংকল্প আর নির্ভুল বিন্যাস সামরিক পরিকল্পনার তিনটি দিক। যুদ্ধের মধ্যে যুদ্ধ শিক্ষার পদ্ধতি আয়ত্ত করা, বিপ্লব ও যুদ্ধ করে জনসাধারণ ও সৈন্যের ব্যবধান দূর করার কথা বলেছেন মাও সেতুং।

মাও সে তুং এর রচনাবলী সমগ্র

পরিশেষে
মাওবাদ, (ইংরেজি: Maoism), পূর্বে মাও সেতুং চিন্তাধারা নামে পরিচিত ছিল। মাওবাদ হচ্ছে চীনের রাজনৈতিক নেতা মাও সেতুং-এর শিক্ষাসমূহ থেকে পাওয়া রাজনৈতিক মতবাদ। এর অনুসারীবৃন্দ মাওবাদী নামে পরিচিত, এবং তারা এটিকে মার্কসবাদ-লেনিনবাদের সংশোধনবাদ-বিরোধী রূপ হিসেবে বিবেচনা করেন। ১৯৫০ ও ১৯৬০-এর বছরগুলোতে এটি বিকশিত হয়, এবং এটি বিস্তৃতভাবে রাজনৈতিক ও সামরিক চালনামূলক আদর্শ হিসেবে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি বাস্তবায়ন করে।

Post a Comment

0 Comments

Close Menu