উত্তরাধিকার
সমরেশ মজুমদার
সমরেশ মজুমদার
Pdf link: Click here
রিভিইউ লিখেছেন: চয়ন বিশ্বাস
![]() |
বুক রিভিইউ: উত্তরাধিকার - সমরেশ মজুমদার |
উত্তরাধিকার সমরেশ মজুমদারের লেখা সর্বাধিক জনপ্রিয় উপন্যাসগুলোর মধ্যে একটা। 'দেশ' পত্রিকায় নিয়মিত প্রকাশিত হতো এই উপন্যাসটা। পরে বই আকারে বের হলে তা পাঠকের মনে স্থায়ীভাবে জায়গা করে নেয়। উত্তরাধিকারের ধারাবাহিকতায় তিনি লিখেছেন কালবেলা, কালপুরুষ আর মৌষলকাল। এটাকে পরিণত করেছেন একটা অসামান্য সিরিজে।
উত্তরাধিকারের মূল চরিত্রের নাম অনিমেষ, কাছের মানুষরা যাকে অনি বলেই ডাকে। নিজের পরিবারের সাথে বসবাস করছিলো স্বর্গছেঁড়ার চা বাগানের কোয়ার্টারে। বংশানুক্রমে দাদু, বাবা দুজনেই চা বাগানের বড় বাবু। যে সময়ের ঘটনা লেখক তাঁর এই উত্তরাধিকার নামক ফ্রেমে আটকাতে চেয়েছেন সে সময়টায় ভারত সবে ইংরেজদের করাল শাসন থেকে মুক্তি পেয়েছে। শিশু অনির হাত দিয়ে ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট পতাকা স্বাধীনতা দিবসের পতাকা উত্তলনের মধ্যে দিয়ে তার মনে দেশপ্রেমের বীজ ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। স্বর্গছেঁড়ার চা বাগান ছেড়ে সে যখন দাদু ও পিশিমার সাথে জলপাইগুঁড়ি চলে গেলো, সেই বীজ চারাগাছের ন্যায় বাড়ছিলো। বালক অনিমেষ দেখেছে কংগ্রেসের জনপ্রিয়তা, দেখেছে কম্যুনিস্টদের সম অধিকারের ঝান্ডা তুলে নেয়া। দুই পক্ষের নীতিগতো টানাপোড়েনের মাঝে নিজেকে বারবার জ্ঞাতসারে অজ্ঞাতসারে জড়িয়েছে সে। অনি বারংবার অর্থ খুঁজে ফিরেছে কংগ্রেসের 'বন্দে মাতরম' আর কম্যুনিস্টদের 'ইনকিলাব জিন্দাবাদ' স্লোগানের। কিন্তু প্রকৃত অর্থ যেন অধরা থেকে গেছে ইচ্ছে করেই। স্বর্গছেঁড়া আর জলপাইগুঁড়ির জীবন অনির চলার পথে এনেছে অনেক মোড়। কাছের মানুষগুলোকে অনেক ভালোভাবে চিনতে শিখেছে সে। রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে মায়ের সাথে কথা বলা, স্নেহময় দাদুর ভালোবাসা, পিশিমার নিখাদ সন্তানসম স্নেহ - এসব নিয়েই কেটেছে অনির জলপাইগুঁড়ির সময়টা। বরাবর চুপচাপ ও নির্বিবাদী অনিমেষের চোখ দিয়েই ঔপন্যাসিক আমাদেরকে দেখিয়েছেন একটা অস্থির সময়ের ছবি। কংগ্রেস-কম্যুনি স্টদের বিরোধ, চিরাচরিত বাঙালী পরিবারের টানাপোড়েন ও ভালোবাসা, দেশপ্রেম আর সামনের অনিশ্চিত জীবনের পথে পা বাড়ানো - সবটাই যেন উঠে এসেছে অবধারিতভাবে।
উপন্যাসের প্রতিটা চরিত্রই শক্তিশালী। বাবা, মা, দাদু সরিৎশেখর, পিশিমা, ঝাড়িকাকু, ছোটকাকু, নিশীথবাবু, মুভিং ক্যাসেল, মন্টু, অর্ক - এমন আরো অনেক চরিত্র কাহিনিতে নিয়ে এসেছে উপভোগ্য বৈচিত্র। লেখক পুরো উপন্যাসের কাহিনিটা সাজিয়েছেন অত্যন্ত মুনশিয়ানার সাথে। সাবলীল বর্ণনা তাতে যোগ করেছে ভিন্নমাত্রা। উত্তরাধিকার শুধু একটা উপন্যাস না। এটা একটা দলিল। এমন এক দলিল যা সাক্ষী হয়ে আছে অনিমেষ নামের একটা সাধারণ ছেলের চোখে দেখা একটা অসাধারণ সময়ের।
উপন্যাসের প্রতিটা চরিত্রই শক্তিশালী। বাবা, মা, দাদু সরিৎশেখর, পিশিমা, ঝাড়িকাকু, ছোটকাকু, নিশীথবাবু, মুভিং ক্যাসেল, মন্টু, অর্ক - এমন আরো অনেক চরিত্র কাহিনিতে নিয়ে এসেছে উপভোগ্য বৈচিত্র। লেখক পুরো উপন্যাসের কাহিনিটা সাজিয়েছেন অত্যন্ত মুনশিয়ানার সাথে। সাবলীল বর্ণনা তাতে যোগ করেছে ভিন্নমাত্রা। উত্তরাধিকার শুধু একটা উপন্যাস না। এটা একটা দলিল। এমন এক দলিল যা সাক্ষী হয়ে আছে অনিমেষ নামের একটা সাধারণ ছেলের চোখে দেখা একটা অসাধারণ সময়ের।
ব্যাক্তিগত অভিমত:
নিঃসন্দেহে, আমার জীবনে পড়া সেরা বইগুলোর একটায় পরিণত হয়েছে এই বইটা। একে একে কালবেলা, কালপুরুষ ও মৌষলকালও পড়ে ফেলবো। যারা এখনো উত্তরাধিকার পড়েননি, আমি বলবো দেরি না করে পড়ে ফেলুন। অন্য একটা সময়ে অবস্থিত অন্য একটা জগত অপেক্ষা করছে আপনার জন্য।
নিঃসন্দেহে, আমার জীবনে পড়া সেরা বইগুলোর একটায় পরিণত হয়েছে এই বইটা। একে একে কালবেলা, কালপুরুষ ও মৌষলকালও পড়ে ফেলবো। যারা এখনো উত্তরাধিকার পড়েননি, আমি বলবো দেরি না করে পড়ে ফেলুন। অন্য একটা সময়ে অবস্থিত অন্য একটা জগত অপেক্ষা করছে আপনার জন্য।