Ad Code

Responsive Advertisement

বুক রিভিইউ: দ্য গার্ল উইথ দি ড্রাগন ট্যাটু - স্টিগ লারসন

দ্য গার্ল উইথ দি ড্রাগন ট্যাটু
 দ্য গার্ল উইথ দি ড্রাগন ট্যাটু 

বইয়ের নামঃ দ্য গার্ল উইথ দি ড্রাগন ট্যাটু
লেখকঃ স্টিগ লারসন
অনুবাদঃ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন
প্রচ্ছদঃ দিলান
প্রকাশনীঃ বাতিঘর
প্রথম প্রকাশঃ ২০১০
গায়ের মূল্যঃ ৩৫০ টাকা
 রিভিউ লেখকঃ Shamima Nasrin Shorna


মিলেনিয়াম ট্রিলজি হিসেবে পরিচিত তিনটি বিখ্যাত থ্রিলার উপন্যাসের প্রথম উপন্যাস- দ্য গার্ল উইথ দি ড্রাগন ট্যাটু বইটি প্রকাশিত হয় লেখকের মৃত্যুর কয়েক বছর পর। লেখক একজন ফিনান্সিয়াল ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট ছিলেন তাই কর্পোরেট জগতে উনার অনেক শত্রু ছিলো, সেজন্য উনার মৃত্যুর পর উনার মৃত্যু নিয়েও অনেক গুজব রয়েছে। এই ট্রিলজি বের হওয়ার পর সারা ইউরোপে তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। এখন পর্যন্ত ৫৫ মিলিয়নের চেয়ে বেশি কপি বিক্রি হয়েছে এই বই।
এই বইয়ের প্রধান চরিত্র মিকাইল ব্লমকোভিস্টও লেখকের মতো একজন জার্নালিস্ট যিনি মিলেনিয়াম নামে এক পত্রিকার প্রধান সাংবাদিক। মিকাইল ব্লমকোভিস্ট এক মানহানির মামলায় হেরে গিয়ে যখন প্রায় বিপর্যস্ত তখনই তার কাছে এক প্রস্তাব আসে ৪০ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া হ্যারিয়েট ভেঙ্গার নামে এক তরুণীর হারিয়ে যাওয়ার রহস্য ভেদ করার জন্য। সেখানেই তার সাথে পরিচয় হয় লিসবন সালান্ডার নামে এক অদ্ভুত তরুণীর সাথে।
লিসবন সালন্ডার যে আপত দৃষ্টিতে দেখতে ভবঘুরে বা মানষিক রোগীদের মতো, মাথায় লাল লাল চুল তার উপর কালো করে ডাই করা, নাকে আর ভ্রুতে রিং পরা, ঠোঁটে কালো লিপস্টিক, শরীরের বিভিন্ন যায়গায় ট্যাটু করা, কাধে একটা ড্রাগনের ট্যাটু। ২৪ বছর বয়সী তরুনী লিসবন কে যে কেউ ১৬/১৭ বছরের টিনএজ বলে ভুল করবে। সে একজন অন্তর্মুখী মেয়ে যার অতীত খুব কম মানুষ জানে, সে অসামাজিক, মানুষের সাথে মিশেনা অথবা বলা যায় কারো ধার ধারেনা।
কিন্তু তার অবসাধারণ কিছু গুন রয়েছে যেগুলো শুধু যাদের সাথে সে কাজ করে তারাই বুঝতে পারে। অসাধারণ ফটোগ্রাফিক মেমোরি আর কম্পিউটার এক্সপার্ট যে ইচ্ছে করলে যে কোনো কম্পিউটার হ্যাক করে তথ্য বের করতে পারে।
আপাত দৃষ্টিতে ব্লমকোভিস্ট আর সালান্ডার কোনো যোগসূত্র না দেখা গেলেও একসময় তাদের এক সূত্রে গাথেন হেনরিক ভ্যাঙ্গার নামে বিরাশী বছরের এক বৃদ্ধ ব্যবসায়ী যিনি চল্লিশ বছর ধরে এক রহস্য বুকে নিয়ে ঘুরছেন। হেনরিক ভ্যাঙ্গার ব্লমকোভিস্ট কে নিয়োগ করেন তার ভাতিজি হ্যারিয়েট ভ্যাঙ্গারের নিখোঁজ হয়ে যাওয়া রহস্য ভেদ করার জন্য, আর তার সাথে যুক্ত হয় লিসবন সালান্ডার। কিন্তু তারা সেই রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে বের হয়ে আসে ভ্যাঙ্গার ফ্যামিলির এক কালো অধ্যায়, তারা কি পেরেছিলো হ্যারিয়েটের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার রহস্য ভেদ করতে? কি হয়েছিলো হ্যারিয়েটের সাথে, সে কি বেঁচে আছে নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে? এ সকল প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে বইটি পড়তে হবে।
পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ থ্রিলার আমাকে তেমন টানে না, আমি সামাজিক বা ক্লাসিক উপন্যাস পড়তেই বেশি পছন্দ করি, দুই বছর আগে এক ম্যারেজ ডে তে মিলেনিয়াম ট্রিলজির প্রথম দুই পর্ব আর সাথে আরো অনেক গুলো বই আমার হাসব্যান্ড গিফট করেছিলেন কিন্তু থ্রিলার বলে আর পড়া হচ্ছিলো না। এবারের বইমেলায় এই ট্রিলজির তৃতীয় বইটির অনুবাদ বের হলে ঠিক করলাম এবার তিনটা একবারে শেষ করব। এই বইটা হাতে নেওয়ার পর প্রথম ১০০ পৃষ্ঠা পড়তে অনেক কষ্ট হয়েছে, প্রায় তিনদিন লেগেছে ১০০ পৃষ্ঠা পড়তে তারপর বাকি ৩৮০ পৃষ্ঠা দুইদিনে শেষ হয়েছে। বইটির অনুবাদ পড়তে অনেক একঘেয়ে লেগেছে, অনুবাদক অনেক গম্ভীর ভাষায় অনুবাদ করেছেন, আরেকটু প্রাঞ্জল হলে ভালো লাগতো। বইয়ে অনেক প্রাপ্ত বয়স্ক কথা রয়েছে, আর অনেক গালাগালি তা সত্ত্বেও বইটির কাহিনীর ধারাবাহিকতায় অনেক ভালো লেগেছে। বইটা পড়ে একদম বিরক্ত লাগেনি কারণ বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ থ্রিলারই হাজার বছরের পুরনো কোনো ইতিহাস নিয়ে যা মানব সভ্যতাকে ধ্বংস করে দিয়ে পারে এরকম টাইপ কিন্তু এই বইটির স্বকীয় প্লট আর অসম্ভব সাসপেন্স আমাকে শেষ পর্যন্ত ধরে রেখেছে। এবার দ্বিতীয় পর্বও একই রকম হবে আশাকরি। 

Post a Comment

0 Comments

Close Menu