শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী|
Shikhita Patitar Atmacharit by Manada Debi|
লালন ফকির জাতধর্মের অসারতার কথা বলতে গিয়ে তাঁর এক গানে বলেছেন, 'গোপনে যে বেশ্যার ভাত খায়, তাতে জাতের কি ক্ষতি হয়'। আসলে সমাজের স্বাভাবিক ও সুস্থ জীবনস্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন এই প্রান্তবাসিনীরা নিজেদের উতসর্গ করে অন্যের কাম-কামনা,
ভোগ-লালসা তৃপ্ত করে থাকে। শাস্ত্র ও সমাজের এমনই বিধান ও বিচার যে, যারা এই ঘৃণিত বারবধূর গৃহে প্রবেশ করার আগে তাদের অর্জিত সব পূণ্য দরোজার বাইরে রেখে যান, সেই পাপগৃহ থেকে বেরিয়ে বাইরে জমা রাখা সেই পুণ্যটুকু আবার সংগ্রহ করে নিয়ে যান, এরাই ধর্ম-শাস্ত্র-সমাজ-সংস্কৃতির ধারন-বাহক-রক্ষক। যারা দেহ বিক্রি করে তারা সমাজের চোখে পতিতা, কিন্তু যারা সেই দেহভোগ করে তারা কিন্তু মোটেই পতিত নয়। শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত এ মানদা দেবী ক্ষোভে-দুঃখে যে কথাটি বলেছিলেন তা স্মরণ করিয়ে দিতে হয় সমাজকে, "...আমার মত পাপরতা, পতিতা নারীর পদতলে যে সকল পুরুষ তাহাদের মান, মর্যাদা, অর্থসম্পত্তি, দেহমন বিক্রয় করেছে... তাদের সমাজ মাথায় তুলে রেখেছে, তারা কবি ও সাহিত্যিক বলিয়া প্রশংসিত, রাজনীতিক ও দেশসেবক বলিয়া বিখ্যাত, ধনী ও প্রতিপত্তিশালী বলিয়া সন্মানিত। এমন কি অনেক ঋষি মোহস্তও গুরুগিরি ফলাইয়া সমাজের শীর্ষস্থানে অধিষ্ঠিত আছেন, তাহা সমাজ জানিয়া শুনিয়া নীরব।"
0 Comments