বইয়ের নামঃ মোসাদ
লেখকঃ মাইকেল বার জোহার এবং মিশেল
অনুবাদকঃ কায়কোবাদ মিলন
প্রকাশনাঃ আবিষ্কার পাবলিকেশন
মূল্যঃ ১৯১ টাকা
ডাউনলোড করুন
মোসাদ
মোসাদের জন্ম হয়েছিলো ইসরাইলের ইন্টালিজেন্সি গোয়েন্দা সংস্থা হিসাবে।
ইহুদিবাদী ইসরাইল ও পশ্চিমা স্বার্থরক্ষা’ই যাদের ব্রত। ক্রমশ মোসাদ প্রকাশ পেতে থাকে একটি ঘাতক দল হিসাবে। আপনি মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে সক্রীয়? কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের এমন একটা ইস্যু নিয়ে কাজ করার আকাঙ্খা প্রকাশ করলেন যা বাস্তবায়িত হলে ইসরাইলের ক্ষতি হবে।
তাহলে আপনাকে বলছি – মোসাদ এমনকি আপনার দেশে, আপনার শহরে, আপনার পাশের রুমে, আপনার বন্ধু রূপে আছে। অর্থাৎ ইসরাইলের স্বার্থ জড়িত এমন কিছু যদি আপনি কথা বলেন তাহলে বুঝতে হবে, মোসাদ পাশে নিয়ে আপনি ঘুমাচ্ছেন! টাকার লোভ দেখিয়ে আপনার প্রতিবেশী কে এরা দলে টানবে এবং তাঁর কর্তৃক আপনার সমস্ত ইনফরমেশন নিয়ে নিবে। কিন্তু হিট টীম এ আপনি থাকবেন না। হিট টীমে মোসাদের সদস্যরাই
থাকবে। ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁরা শত্রুর পিছু ছাড়ে না
যতক্ষণে শত্রুর মৃত্যু নিশ্চিত না হয়। মৃত্যু কিভাবে হলো এর কোন প্রমাণ রাখে না। ইসরাইল “আঘাত করলে জবাব দিতে জানে” এমন কোন রাষ্ট্রের সাথে সংঘাতে জড়াতে চায় না। প্রথম প্রথম মোসাদ প্রতিপক্ষ কে কুপোকাত করত, কিন্তু আস্তে আস্তে তাঁরা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে যাদের কে ইসরাইলের জন্য হুমকি মনে করে তাকেই তাঁরা হত্যা করে অত্যন্ত ঘৃণ্যভাবে! কখনো বিষ প্রয়োগে, কখনো গুলি করে কিংবা বিস্ফোরকের মাধ্যমে।
ইসরাইল নামক ঐ অবৈধ ভূখন্ডের দিকে যে বা যারাই অঙ্গুলি তুলেছে মোসাদ তাদের পৈশাচিক ভাবে হত্যা করেছে। নিজেদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে যেন না পরে সেজন্য ইসরাইল মোসাদ কর্তৃক ইরান, ইরাক, সিরিয়া, লেবানন প্রভৃতি মুসলিম রাষ্ট্রসমূহের বিজ্ঞানী, বুদ্ধিজীবি, রাজনীতিজ্ঞ হত্যা করেছে অত্যন্ত ঘৃণ্য পদ্ধতিতে! তাদের নজর শুধু সাম্রাজ্যবাদের বিপক্ষে লড়াইরত মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর। মধ্যপ্রাচ্যের মুসলমানরা যেন কোনভাবেই শক্তিশালী না হয়ে উঠতে পারে, তাঁর জন্য এরা জীবন বাজি রেখে হত্যাকান্ড সহ মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর প্লান ভণ্ডুল করে দেয়। দরকার হলে তাঁরা আম্রিকাকেও সাহায্য করে যাতে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম রাষ্ট্রগুলো কোনভাবে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। মোসাদ সিআই প্রভৃতি নামকরা গোয়েন্দা সংস্থা এর সাথে একাত্মা হয়, এবং ইরান যাতে কোন মতেই পরমাণু শক্তি অর্জন না করতে পারে সেজন্য তাঁরা কম চেষ্টা করেনি।
এমনকি ২০১১ সালে মোসাদ ইরানে সাইবার হামলা চালিয়ে পরমাণু কেন্দ্রের হাজার হাজার অত্যন্ত উঁচু মানের কম্পিউটার নষ্ট করে দেয়! বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ইরানের প্রায় অর্ধেক পরমাণু কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয় এর দরুন। তাছাড়াও সিরিয়ার পরমাণু কেন্দ্রে হামলা করে সেটি ধ্বংস করে দেয়। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায় মোসাদের কারণেই। সাদ্দাম হোসেন এর জায়ান্ট কামান/গান পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে একজন আম্রিকান বিজ্ঞানীকে হত্যা করে। আমরা গোয়েন্দা বলতে যা বুঝি মোসাদ সেরকম গোয়েন্দা নয়। মোসাদ কে বলা যেতে পারে “সিরিয়াল কিলার” যারা কিনা ইসরাইলের জন্য খুন করে, এবং নিজের জীবন দিতে সর্বদা প্রস্তুত।
বইটির অনুবাদক কায়কোবাদ মিলন কে ধন্যবাদ। তিনি অনুবাদ করেছেন কারোর স্বার্থের দিকে না তাকিয়েই। আর রেটিং এ অনুবাদক কে আমি ১০ এ ৯.৫ দেবো। কিন্তু ২ জন লেখক পুরোপুরি নিরপেক্ষ হয়ে লিখতে পারেননি। যার দরুন বইটিতে ইরান প্রধান কে কিঞ্চিত কটুক্তি করেছেন। ফিলিস্তিনের জন্য স্বাধীনতা সংগ্রামরত হামাস কে সন্ত্রাসী, লেবাননের সংগ্রামী হিজবুল্লাহ বাহিনী কে সন্ত্রাসী আক্ষ্যা দিতে তাদের কলম কাঁপেনি
মোটেই! লেখকদের নিরপক্ষ একান্তই দরকার।
লেখকদের আমি রেটিং এ ১০ এ ৭ দেবো। সর্বোপরি মোসাদের কর্মকাণ্ড সম্বন্ধে যাদের জানার আকাঙ্খা রয়েছে, তাঁরা এই বইটি পাঠ করতে পারেন। প্রতিটি গল্পের মতো সত্য ঘটনা আপনাকে শিহরিত করবে! আমি কথা দিচ্ছি আপনি বইটি খুব মজা নিয়ে পড়বেন এবং শেষ না করে উঠতেই চাইবেন না।
0 Comments