Ad Code

Responsive Advertisement

কিয়ামতের আলামত pdf


বইঃ কিয়ামতের আলামত 
পৃষ্ঠা: ১৪৯
Pdf : Click here


কিয়ামত কি? তার আলামত বা নিদর্শন।
কিয়ামত অবশ্যই আসবে, এতে সন্দেহ নেই; কিন্ত অধিকাংশ লোক বিশ্বাস স্থাপন করে না।
(সূরা আল-মু’মিন আয়াত৫৯)

কিয়ামত কেমন হবে,কিভাবে হবে ?এই কল্পনা করার সময় আজ আমাদের মাঝে নেই। আধুনিকতার মায়াজালে বন্ধি হয়ে আছি সবাই। একদিন যে পৃথিবী নামের এই মায়ার গৃহ ছেড়ে মরনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে হবে তা প্রায় ভুলে যেতে বসেছি। তাই স্বরণ করে দিতে-ই এই অধমের লেখা।

কিয়ামত অবশ্যম্ভাবী।কিয়ামত হচ্ছে যাবতীয় সৃষ্ট বস্তুর সর্বশেষ পরিণতি অর্থাৎ নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার নাম। কিয়ামত কখন হবে তা পরম করুণাময় রাব্বুল আলামীনই ভালো জানেন।
এ বিষয়ে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেনঃ
يَسْأَلُونَكَ عَنِ السَّاعَةِ أَيَّانَ مُرْسَاهَا قُلْ إِنَّمَا عِلْمُهَا عِندَ رَبِّي لاَ يُجَلِّيهَا لِوَقْتِهَا إِلاَّ هُوَ ثَقُلَتْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ لاَ تَأْتِيكُمْ إِلاَّ بَغْتَةً يَسْأَلُونَكَ كَأَنَّكَ حَفِيٌّ عَنْهَا قُلْ إِنَّمَا عِلْمُهَا عِندَ اللّهِ وَلَـكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لاَ يَعْلَمُونَ
তারা আপনাকে জিজ্ঞেস করে, কিয়ামত কখন অনুষ্ঠিত হবে? বলে দিন এর খবর তো আমার পালনকর্তার কাছেই রয়েছে। তিনিই তা অনাবৃত করে দেখাবেন নির্ধারিত সময়ে। আসমান ও যমীনের জন্য সেটি অতি কঠিন বিষয়। যখন তা তোমাদের উপর আসবে অজান্তেই এসে যাবে। আপনাকে জিজ্ঞেস করতে থাকে, যেন আপনি তার অনুসন্ধানে লেগে আছেন। বলে দিন, এর সংবাদ বিশেষ করে আল্লাহর নিকটই রয়েছে। কিন্তু তা অধিকাংশ লোকই উপলব্ধি করে না। (সুরা আ’রাফঃ১৮৭)
➲ জন্ম মৃত্যু যেমন সত্য ঠিক তেমনি কিয়ামত যে হবে তাও সত্য,যা পাশ কেটে যাওয়ার কোনো রাস্তা নেই।এ সত্যকে মেনে নেওয়ার নামই হচ্ছে ঈমান। ঈমানদারদের পরকালকে নিশ্চিত বিশ্বাস করতে হবে আর বিশ্বাস করতে হবে কিয়ামতের দিনকে - যেদিন ধ্বংস হয়ে যাবে সুন্দর এই ভূবন থাকবেনা কিছুই।
❋আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন পবিত্র কলামে পাকের সুরা বাকারায় বলেন-➴
وَبِالآخِرَةِ هُمْ يُوقِنُونَ
আর আখেরাতকে যারা নিশ্চিত বলে বিশ্বাস করে।( আয়াত ৩)
وَأُوْلَـئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
আর তারাই যথার্থ সফলকাম। (আয়াত ৫)
সেই দিন সবাইকে দাড়াতে হবে মহান রাব্বুল আলামীনের দরবারে।
═════════════════
❖ আসুন সেই কিয়ামত সম্পর্কে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার পবিত্র কলামে কি বলে দেখি ═➴
❋সূরা আল ক্বেয়ামাহ আয়াত ৬-১১
يَسْأَلُ أَيَّانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ সে প্রশ্ন করে-কেয়ামত দিবস কবে?
فَإِذَا بَرِقَ الْبَصَرُ যখন দৃষ্টি চমকে যাবে,
وَخَسَفَ الْقَمَرُ চন্দ্র জ্যোতিহীন হয়ে যাবে।
وَجُمِعَ الشَّمْسُ وَالْقَمَرُ এবং সূর্য ও চন্দ্রকে একত্রিত করা হবে-
يَقُولُ الْإِنسَانُ يَوْمَئِذٍ أَيْنَ الْمَفَرُّ সে দিন মানুষ বলবেঃ পলায়নের জায়গা কোথায় ?
كَلَّا لَا وَزَرَ না কোথাও আশ্রয়স্থল নেই।
-----------------------------➲
❋সূরা আল মুদ্দাসসির আয়াত ৮-৯
فَإِذَا نُقِرَ فِي النَّاقُور যেদিন শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে;
فَذَلِكَ يَوْمَئِذٍ يَوْمٌ عَسِيرٌ সেদিন হবে কঠিন দিন,
-----------------------------➲
❋সূরা আল ইনফিতার আয়াত ১-৪
إِذَا السَّمَاء انفَطَرَتْ যখন আকাশ বিদীর্ণ হবে,
وَإِذَا الْكَوَاكِبُ انتَثَرَتْ যখন নক্ষত্রসমূহ ঝরে পড়বে,
وَإِذَا الْبِحَارُ فُجِّرَتْ যখন সমুদ্রকে উত্তাল করে তোলা হবে,
وَإِذَا الْقُبُورُ بُعْثِرَتْ এবং যখন কবরসমূহ উম্মোচিত হবে,
----------------------------➲
❋সূরা আত-তাকভীর আয়াত ১-১৪
إِذَا الشَّمْسُ كُوِّرَتْ যখন সূর্য আলোহীন হয়ে যাবে,
وَإِذَا النُّجُومُ انكَدَرَتْ যখন নক্ষত্র মলিন হয়ে যাবে,
وَإِذَا الْجِبَالُ سُيِّرَتْ যখন পর্বতমালা অপসারিত হবে,
وَإِذَا الْعِشَارُ عُطِّلَتْ যখন দশ মাসের গর্ভবতী উষ্ট্রীসমূহ উপেক্ষিত হবে;
وَإِذَا الْوُحُوشُ حُشِرَتْ যখন বন্য পশুরা একত্রিত হয়ে যাবে,
وَإِذَا الْبِحَارُ سُجِّرَتْ যখন সমুদ্রকে উত্তাল করে তোলা হবে,
وَإِذَا النُّفُوسُ زُوِّجَتْ যখন আত্মাসমূহকে যুগল করা হবে,
وَإِذَا الْمَوْؤُودَةُ سُئِلَتْ যখন জীবন্ত প্রোথিত কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হবে,
بِأَيِّ ذَنبٍ قُتِلَتْ কি অপরাধে তাকে হত্য করা হল?
وَإِذَا الصُّحُفُ نُشِرَتْ যখন আমলনামা খোলা হবে,
وَإِذَا السَّمَاء كُشِطَتْ যখন আকাশের আবরণ অপসারিত হবে,
وَإِذَا الْجَحِيمُ سُعِّرَتْ যখন জাহান্নামের অগ্নি প্রজ্বলিত করা হবে
وَإِذَا الْجَنَّةُ أُزْلِفَتْ এবং যখন জান্নাত সন্নিকটবর্তী হবে,
عَلِمَتْ نَفْسٌ مَّا أَحْضَرَتْ তখন প্রত্যেকেই জেনে নিবে সে কি উপস্থিত করেছে।
--------------------------➲
❋সূরা যিলযাল আয়াত ১-৫
إِذَا زُلْزِلَتِ الْأَرْضُ زِلْزَالَهَا যখন পৃথিবী তার কম্পনে প্রকম্পিত হবে,
وَأَخْرَجَتِ الْأَرْضُ أَثْقَالَهَا যখন সে তার বোঝা বের করে দেবে।
وَقَالَ الْإِنسَانُ مَا لَهَا এবং মানুষ বলবে, এর কি হল ?
يَوْمَئِذٍ تُحَدِّثُ أَخْبَارَهَا সেদিন সে তার বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে,
بِأَنَّ رَبَّكَ أَوْحَى لَهَا কারণ,আপনার পালনকর্তা তাকে আদেশ করবেন।
----------------------------➲
❋সূরা আন-নাবা ১৭-২০
إِنَّ يَوْمَ الْفَصْلِ كَانَ مِيقَاتًا নিশ্চয় বিচার দিবস নির্ধারিত রয়েছে।
يَوْمَ يُنفَخُ فِي الصُّورِ فَتَأْتُونَ أَفْوَاجًا যেদিন শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে, তখন তোমরা দলে দলে সমাগত হবে।
وَفُتِحَتِ السَّمَاء فَكَانَتْ أَبْوَابًا আকাশ বিদীর্ণ হয়ে; তাতে বহু দরজা সৃষ্টি হবে।
وَسُيِّرَتِ الْجِبَالُ فَكَانَتْ سَرَابًا এবং পর্বতমালা চালিত হয়ে মরীচিকা হয়ে যাবে।
----------------------------➲
❋সূরা আল মুরসালাত ৮-১০
فَإِذَا النُّجُومُ طُمِسَتْ অতঃপর যখন নক্ষত্রসমুহ নির্বাপিত হবে,
وَإِذَا السَّمَاء فُرِجَتْ যখন আকাশ ছিদ্রযুক্ত হবে,
وَإِذَا الْجِبَالُ نُسِفَتْ যখন পর্বতমালাকে উড়িয়ে দেয়া হবে এবং
═════════════════
❖ এবার আসুন সেই কিয়ামত সম্পর্কে আল্লাহর নবী ﷺকি বলে দেখি═➴

➲ হজরত আবদুল্লাহ ইবনুূু মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা এক ইয়াহুদী আলিম নবীﷺ -এর নিকট এসে বললো, হে মুহাম্মাদ ! অথবা (বললো) হে আবূল কাসেম কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা আকাশকে এক আঙ্গুলে,যমীনকে এক আঙ্গূলে,পর্বত ও বৃক্ষরাজি এক আঙ্গুলে; পানি ও মাটি এক আঙ্গুলে এবং সমস্ত সৃষ্টিকে এক আঙ্গূলে তুলে ধরবেন। তারপর এগুলো দুলিয়ে বলবেন, আমিই বাদশাহ, আমিই অধিপতি।”পাদরীর কথা শুনে রাসুলুল্লাহ ﷺ বিনয়ের সাথে তার সত্যায়ন স্বরুপ হাসলেন।এরপর তিনি পাঠ করলেনঃ “তারা আল্লাহর যথোচ্চিত সম্মান করেনি।
কিয়ামতের দিন সমস্ত পৃথিবী তার হাতের মুষ্টিতে এবং আকাশমণ্ডলী থাকবে তার ডান হাতের আয়ত্ত্বে। পবিত্র ও মহান তিনি, তারা যাকে শরীক করে- তিনি তার ঊর্ধ্বে।(সহীহ মুসলিম)

➲ হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, একদিন রাসূল ﷺ জনসমুক্ষে বসা ছিলেন, এমন সময় এক ব্যাক্তি এসে (জিবরাঈল আ:) কিয়ামত এর ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ ﷺ কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেনঃ আমি আপনাকে কিয়ামতের আলামতসমূহ বলে দিচ্ছিঃ বাঁদী যখন তার প্রভুকে প্রসব করবে এবং উটের নগণ্য রাখালেরা যখন বড় বড় অট্টালিকা নির্মাণে প্রতিযোগিতা করবে। (সহিহ বুখারী)

➲ হজরত সাহল ইবনুূু সা’দ রাদিয়াল্লাহু তালা আনহু থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন ময়দার রুটির ন্যায় (গোল) লালচে সাদা যমীনের উপরে লোকদের একত্রিত করা হবে। সেখানে কারো কোন বিশেষ নিদর্শন বিদ্যমান থাকবে না। (সহীহ মুসলিম)

➲ হজরত উমর ইবনুূুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু তালা আনহু থেকে বর্ণিত,
আগন্তুক বললেন, (হজরত জিবরাঈল আলাইহি ওয়াসাল্লাম)) আপনি (তাহলে) কিয়ামতের কিছু আলামত সম্পর্কে আমাকে অবহিত করুন;রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন - (এর আলামত হচ্ছে) ক্রীতদাসী (বাঁদী) তার প্রভূকে প্রসব করবে এবং তুমি দেখতে পাবে খালি মাথা ও খালি পায়ে ছাগলের পালের রাখালরা (অর্থাৎ অশিক্ষিত মূর্খ, অর্বাচীন ও নীচু স্তরের লোকজন) বিশালকায় প্রাসা’দর অধিপতি হয়ে বসবে।
(সহীহ মুসলিম ও বায়হাকী)

➲ হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,
আল্লাহর রাসুল ﷺ বলেছেন - যখন তুমি দেখবে আমানতের খিয়ানত হতে তখন কিয়ামতের অপেক্ষা করবে। বর্ণনাকারী বললেন: হে আল্লাহর রাসুলﷺ তা কিভাবে বুঝবো?
তিনি বললেন- যখন কোন অযোগ্য ব্যক্তিকে গুরু দায়িত্ব দেয়া হবে তখনি কিয়ামতের অপেক্ষা করবে।
(সহিহ বুখারী)
════════════
❖ পবিত্র কুরআন ও হাদীস শরীফে কিয়ামতের বিভিন্ন নিদর্শন বলে দেয়া হয়েছে।
নিন্মে যার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নিদর্শন সংক্ষিপ্ত উপস্থাপন করলাম।
❋জমিনের বিভিন্ন অংশে ভূমিকম্প বৃদ্ধি পাবে।
❋দাসী ও সমাজের নিকৃষ্ট মেয়েরা যে সন্তান জন্ম দেবে সে সমাজের অন্যতম নেতা হবে।
❋এমন কিছু ঘটনা ঘটবে যা পূর্বে কখনো ঘটেনি এবং ঘটার কোন ধারণাই ছিল না।
❋মহিলারা অশ্লীলতায় ডুবে যাবে।
❋ মানুষের মধ্যে সুদের ব্যাপক বিস্তার হয়ে যাবে।
❋অবৈধ জারজ সন্তানের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে ।
❋অযোগ্য ও অসৎ ব্যক্তিরা সমাজ ও রাষ্ট্রের নেতা নির্বাচিত হবে।
❋ লোকেরা পরস্পর মসজিদ নিয়ে গর্ব করবে।
❋জেনা ব্যাভিচার আর মদপান বেড়ে যাবে।
❋দুনিয়ার সম্মান ও সম্পদ অর্জনের জন্য ইসলামী জ্ঞান (ইলম) শিক্ষা ও প্রচার করা হবে।
❋সহজ সরল ব্যক্তিরা অবহেলার পাত্র হবে আর প্রতারকদের চালাক চতুর বলে প্রশংসা করা হবে।
❋সমাজে ফাসাদ দুর্নীতি ব্যাপক আকার ধারণ করবে।
════════════
❖কিয়ামতের আসল আলামতগুলো হচ্ছেঃ
❋দাজ্জালের আত্মপ্রকাশ।
❋হযরত ঈসা (আঃ) এর অবতরন।
❋ ইয়াজূজ-মাজূজ।
❋পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয়।
❋দাব্বাতুল র্আ‌দ (প্রাণীবিশেষ যা মাটি ভেদ করে বের হবে)।
❋তিনটি ভূধ্বস,একটি পূর্ব প্রান্তে,একটি পশ্চিম প্রান্তে আরেকটি জাযীরাতুল আরবে।
════════════
❖ কিয়ামতের দিন আল্লাহর ছায়ায় আশ্রয়প্রাপ্তরা।
রাসূলুল্লাহ ﷺবলেছেন,“যেদিন আল্লাহর ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া থাকবে না সেদিন তিনি সাত শ্রেণীর লোককে তার ছায়ায় স্থান দেবেন। তারা হলেন-
(১) ন্যায় পরায়ন শাসক
(২) যৌবন কাল আল্লাহর ইবাদতে কাটিয়েছে এমন যুবক
(৩) সে লোক যার মন মসজিদের সাথে যুক্ত থাকে। মসজিদ থেকে বের হয়ে আসার পর আবার ফিরে যাবার জন্য মন ব্যাকুল থাকে
(৪) সে দু’ব্যক্তি যাদের ভালবাসার ভিত্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি। যাদের একত্রিত হওয়া এবং বিচ্ছিন্ন হওয়া একমাত্র আল্লাহর জন্য হয়ে থাকে
(৫) ঐ ব্যক্তি যে, নিভৃতে আল্লাহকে স্মরণ করে চোখের পানি ফেলে
(৬) ঐ ব্যক্তি যে, আল্লার ভয়ে কোন উচ্চ বংশের সুন্দরী যুবতীর বদ কাজের আহবানকে প্রত্যাখান করেছে ‘আমি আল্লাহকে ভয় করি’ বলে
(৭) ওই ব্যক্তি সাদকা করার সময় যার বাম হাত টের পায় না, ডান হাত কী দান করেছে।”
(বুখারী, মুসলিম)

Post a Comment

0 Comments

Close Menu