Ad Code

Responsive Advertisement

বুক রিভিইউ: এ ফায়ার অব ফোর্থ সেঞ্চুরি - জিমি হাইসন


বই: এ ফায়ার অব ফোর্থ সেঞ্চুরি
লেখক: জিমি হাইসন
প্রকাশক: ঐতিহ্য
মুদ্রিত মূল্য: ৫৫০/=
রিভিইউ লিখেছেন: Mostanoor Sarker Moon

প্রায় ষোলশ দবছর পূর্বে স্পার্টায় বাস করত ব্যবসায়ী কন্যা অনিন্দ্য সুন্দরী অ্যালেক্সান্দ্রা। দেবতা প্রমিথিউসের অভিশাপ বয়ে বেড়াচ্ছিল সে। ভাগ্যের ফেরে জাহাজডুবিতে হারায় বাবাকে।
কোনমতে বেঁচে যায় আরেক ভাগ্যবিড়ম্বিত যুবক ফিদেলের সহায়তায়। যাকে বাবা জামাতা হিসেবে পছন্দ করে গিয়েছিলেন। দ্বীপে আটকে পরে আরও কিছু লোকের সঙ্গে। একসময় ভাগ্য সহায় হয়। রোমের রাজজাহাজ গ্রিস হতে ফেরার পথে তাদের দেখে উদ্ধার করে এই জনমানবহীন জায়গা থেকে।
যাবার কোন জায়গা না থাকায় অ্যালেক্সান্দ্রার জায়গা হয় রাজবাড়িতে। ফিদেল তাকে আশ্বাস দেয় দ্রুত ফিরিয়ে নিয়ে যাবার। প্রতিদিন গীর্জায় গিয়ে ঈশ্বরের প্রার্থণা আর ফিদেলের সাথে সাক্ষাৎ করে দিন অতিবাহিত হয় তার। কিন্তু একদিন ফিদেলের ক্ষমার অযোগ্য অপরাধে তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে সে।
খুব অসহায় মনে হয় নিজেকে।

রাজপ্রাসাদে তার অবস্থান নিয়েও সম্রাট বোহেমের অসন্তোষ। তিনি কোনভাবেই অতীতের কোন তিক্ততার পুনরাবৃত্তি চান না। এমনিতেই লোকে বলাবলি করে যুবরাজ ইথান অরবিটাসের শরীরে বাস করে অত্যাচারী সম্রাট ইথান মিরিউলাসের আত্মা। তবে যুবরাজ ইথান এসবে কর্ণপাত করে না। ধীরে দূর্বল হয়ে পরে অ্যালেক্সান্দ্রার প্রতি। আংটি পরিয়ে বাগদত্তা করে নেয় তাকে। এতে সম্রাট ক্ষিপ্ত হয়ে যান ইথানের প্রতি।
এর মধ্যেই রোমে শুরু হয় ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত। এই বিপর্যয় থেকে বাঁচতে যুবরাজের বাগদত্তাকে বিসর্জন দিতে চায় প্যাগান পুরোহিতরা। বাধা হয়ে দাঁড়ায় ইথান। পুরো দেশ তার বিপক্ষে চলে যায়। এমনকি বাবাও। সবকিছু ত্যাগ করে প্রিয়তমাকে নিয়ে পালিয়ে যায়। তার অনুপস্থিতিতে ভগ্নিপতি বসেন সিংহাসনে আর ষড়যন্ত্র করতে থাকেন ইথানকে সরিয়ে দেয়ার। মাতৃভূমিতে ফেরার সব পথ রুদ্ধ হয়ে যায়।
একসময় অপ্রত্যাশিত বেদনায় দগ্ধ হয়ে উদভ্রান্ত হয়ে যায়। প্রিয় মানুষকে ভুল বোঝার মাশুল গুনতে আবার ফিরতে হয় নিজ ভূমিতে। যে করেই হোক ভালবাসার মানুষটাকে বাঁচাতে হবে।
এ মিস্ট্রি অব ফোর্থ সেঞ্চুরি পড়ে বেশ ভাল লেগেছিল। এটা তার সিক্যুয়ল। তবে এখানে পাত্র-পাত্রী ভিন্ন। প্রেক্ষাপট ও সময়কাল ষোলশ বছর পূর্বের। যুদ্ধ, মিথ, বীরত্ব, প্রেম, বিশ্বাসঘাতকতা, ষড়যন্ত্র, রাজনীতি, আত্মত্যাগের সংমিশ্রণে গড়ে উঠেছে কাহিনী। ঘটনাপ্রবাহে যে ধরনের আবহ প্রয়োজন ছিল তেমনটাই উঠে এসেছে।

ছোট ছোট অধ্যায়ে বিভক্ত থাকায় পড়তে বেগ পেতে হয় নি। বর্ণনাও বেশ সাবলীল। বর্তমান সময়ে অতীত নিয়ে লেখাটা চ্যালেঞ্জিং। এজন্য ঐ সময়ের ইতিহাস, রীতিনীতি, সমাজব্যবস্থা সম্পর্কে ভালভাবে জানা থাকাটা জরুরী। তা না হলে সামঞ্জস্যতা ঠিক রাখা যায় না। এদিক থেকে বইটি এসব ত্রুটিমুক্ত। পড়ার সময় মনে হয় যেন গল্পের ছলে ইতিহাস বা ইতিহাসের ছলে গল্প পড়ছি। পাঠককে ধরে রাখার ক্ষমতা রয়েছে।
তবে প্রথম খন্ডের সাথে দ্বিতীয় খন্ডের ঘটনাপ্রবাহ অনেকটাই মিলে যায়। ইথান আর অ্যালেক্সান্দ্রা যেন ইথান মিরিউলাস আর অ্যালেক্সরই প্রতিচ্ছবি। প্রথমদিকে পড়তে গিয়ে মনে হচ্ছিল পূর্বের ঘটনাপ্রবাহই ভিন্নভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। অবশ্য পরবর্তীতে স্বতন্ত্রতা দেখা যায়। যদিও শেষ দিকে গিয়ে আবার আগের মতই কিছুটা সাদৃশ্য লক্ষণীয়।
লেখিকার গল্প বলার ঢং আকর্ষণীয়। ছোট ছোট অনুভূতির সুন্দর বহিঃপ্রকাশ, সংক্ষিপ্ত বাক্য ব্যবহার, ঘটনাপ্রবাহের ক্রম উল্লেখ আর চরিত্রসমূহের সহজ সরল চিত্রায়ন প্রশংসনীয়। 
তবে বরাবরের মতই কিছু অপ্রচলিত শব্দের ব্যবহার চোখে লেগেছে। কিছু জায়গায় বর্ণনা এবং ভাবাবেগ আর একটু কম হলে বোধ করি আর একটু আকর্ষণীয় হত।

যাই হোক পড়ে ভালো লেগেছে। অনুবাদ ভেবে অনেকের ভুল হতে পারে। এটা কোন অনুবাদ নয়। মৌলিক বই।
ঐতিহ্যের বাঁধাই, বানান কোন কিছু নিয়ে তেমন অভিযোগ নেই। তবে মূল্য আরেকটু কম হলে পাঠকের অনুকূলে হত।
অগোচরে ভুলত্রুটি হয়ে থাকলে ক্ষমাপ্রার্থী।

Post a Comment

1 Comments

  1. জিমি হাইসন এর এ ফায়ার অব ফোর্থ সেঞ্চুরি বইটি কিভাবে ডাউনলোড করা যায় অনুগ্রহ করে জানিয়ে সহায়তা করুন

    ReplyDelete

Close Menu