বইঃ
শ্যামল ছায়া
লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ
প্রকাশকালঃ ২০০৩
প্রকাশকঃ অন্যপ্রকাশ
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৪৮
মূল্যঃ ১০০ টাকা
রিভিউঃ মাসুম আহমেদ আদি
দেশে তখন মুক্তিযুদ্ধ চলছে। ঢাকা থেকে শয়ে শয়ে মানুষ গ্রামের দিকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তারমধ্যে কেউ যেতে পেরেছে কেউ বা পথেই মারা গেছে। পাকিস্তানি বর্বর সেনারা আমাদের মা বোনদের ইজ্জত নষ্ট
করেছে। গ্রামে গ্রামে ঢুকে নির্বিচারে গুলি করে মেরেছে সাধারন জনগন। তাদের সহায়তা করেছে আমাদের দেশেরই ঘৃণিত কিছু ব্যক্তি। শান্তি কমিটি নামে তারা দল খুলেছে। পাকিস্তানিরা যখন আমাদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে তখন তারাও শুরু করে লুন্ঠন, হত্যা, ধর্ষন। এসব দেখে বাংলার তরুণরা হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিল। যে বয়সে তাদের হাতে থাকার কথা ছিল কলম, সে বয়সে তারা অস্ত্র হাতে ট্রেনিং নিতে চলে যায় ভারতে। সেখান থেকে ফিরে এসে একের পর এক অভিযান চালিয়ে ধ্বংস করে দেয় পাকসেনাদের ক্যাম্প। তখনকার সময়ে একদল মুক্তিযোদ্ধা বড় একটা নৌকায় করে অপারেশনে যাচ্ছে। তারই কাহিনী এটা।
নৌকার মধ্যে আছে জাফর, আসলাম, মজিদ, হাসান আলি এবং হুমায়ূন ভাই। জাফর সবথেকে বিচক্ষণ। প্রতিটা অপারেশনে নিজ দায়ীত্ব ঠিকভাবে পালন করে সে। হাসান আলি দাড় বেয়ে নৌকা সামনে নিয়ে যায়। এই এলাকার পথঘাট সব তার চেনা। একদম অন্ধকারেও ঠিক জায়গায় নৌকা নিয়ে হাজির হতে পারে সে। তার আরেকটা ভাল গুন হচ্ছে তার শ্রবণশক্তি। দুই মাইল দূরে কোনও লঞ্চ অথবা নৌযান থাকলে সেটার আওয়াজ পেয়ে যায় সে। শুধুমাত্র তার সতর্কতার জন্য অনেকবার বেচে গেছে সবাই। এই দলের সবথেকে ভিতু হচ্ছে মজিদ। পাক সেনাদের নাম শুনলেই ভয়ে কলিজা শুকায় যায়। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, অপারেশনের সময় সবথেকে ঠান্ডা থাকে সেই। তার হাতের নিশানা অনেক ভালো। হুমায়ূন ভাই আপাতত এই মিশনের দলনেতা। যদিও জাফর আপত্তি করেছিল তাকে দলনেতা বানাতে। কারন হুমায়ূন ভাই একটু দুর্বল প্রকৃতির।
তারা একটা অপারেশনে যাচ্ছে নৌকায় করে। একটা জায়গায় নৌকা থেকে নেমে ১০ মাইল এর মত হাটতে হবে। সাথে থাকবে মেশিনগান, গুলির বাক্স এবং আরও অস্ত্রশস্ত্র। যাবেন নাকি তাদের সাথে? নিজের দেশের স্বাধীনতা বলে কথা। না গিয়ে উপায় আছে?
ব্যক্তিগত মতামতঃ
পড়েছি আর মুগ্ধ হয়েছি। মাত্র ৪৮ পৃষ্ঠার একটা বইয়ে এত সুন্দর করে মুক্তিযুদ্ধের কাহিনী লেখা তার পক্ষেই সম্ভব। যারা পড়েননি এখনও তারা চরম মিস করেছেন।
0 Comments